স্বদেশ ডেস্ক: রাশিয়ায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনির সমর্থনে হওয়া বিক্ষোভে যোগ দেয়ায় তিন হাজারের বেশি মানুষকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছেন পর্যবেক্ষকরা।
সাম্প্রতিক সময়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে হওয়া অন্যতম এই বিক্ষোভ র্যালিগুলোতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ উপস্থিত থাকলেও হাজার হাজার মানুষ অংশ নেয়।
মস্কোতে দাঙ্গা পুলিশ বিক্ষোভকারীদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করছে, এমনও দেখা গেছে।
প্রেসিডেন্ট পুতিনের সমালোচকদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তি অ্যালেক্সেই নাভালনি গত রোববার গ্রেফতার হওয়ার পর বিক্ষোভের ডাক দেন।
গত অগাস্টে রাশিয়ায় নাভালনির ওপর স্নায়ু বিকল করার বিষাক্ত রাসায়নিক প্রয়োগ করা হয়। তারপর থেকে তিনি চিকিৎসার জন্য বার্লিনে ছিলেন।
গত রোববার বার্লিন থেকে মস্কোতে ফেরার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। প্যারোলের শর্ত ভাঙ্গার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাকে।
নাভালনি দাবি করেছেন যে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা।
ওভিডি ইনফো নামে একটি বেসরকারি সংস্থা, যারা র্যালি পর্যবেক্ষণের কাজ করে থাকে, জানিয়েছে যে প্রায় ৩,১০০ মানুষকে আটক করা হয়েছে, যার মধ্যে ১,২০০ জনের বেশি মস্কো থেকে।
বিক্ষোভের মধ্যে নাভালনি’র স্ত্রী ইউলিয়াকেও কিছুক্ষণের জন্য আটক করে পুলিশ। তিনি ওই ঘটনার একটি ছবিও তার ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন।
এ বিষয়ে ক্রেমলিন কোনো মন্তব্য করেনি।
বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ
মস্কো, সেইন্ট পিটার্সবার্গ, সাইবেরিয়াসহ প্রায় ১০০ শহরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে মানুষ। কিশোর ছাত্র ছাত্রী থেকে শুরু করে বয়স্ক ব্যক্তিরা পর্যন্ত বিক্ষোভে অংশ নেয়। বিক্ষোভকারীরা মি. নাভালনির মুক্তি দাবি করে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের ধারণা অনুযায়ী, মস্কোর র্যালিতে অন্তত ৪০ হাজার মানুষ অংশ নেয়। তবে রাশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাষ্যমতে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা ৪ হাজার।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন রাশিয়ায় এই মাত্রার বিক্ষোভ আগে কখনো দেখা যায়নি আর মস্কোতে গত দশ বছরের মধ্যে এত বড় পরিসরে বিক্ষোভ হয়নি।
মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ বিঘ্নিত
রাশিয়ায় শনিবার মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ বিঘ্নিত হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে, তবে বিক্ষোভের সাথে এই ঘটনার সম্পর্ক আছে কিনা জানা যায়নি।
সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ টিকটকে বিক্ষোভ কর্মসূচিকে সমর্থন করে অসংখ্য ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে এবং নাভালনি সম্পর্কে ভাইরাল মেসেজ শেয়ার করা হয়েছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার মিডিয়া পর্যবেক্ষণকারী আনুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠান ‘রসকমনাদযোর’ টিকটকের কাছে দাবি জানিয়েছে যেন ‘অপ্রাপ্তবয়স্কদের বেআইনি কাজে উৎসাহ দেয়’ – এরকম যে কোনো কন্টেন্ট তারা সরিয়ে নেয়।
রাশিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিভাবকদের অনুরোধ জানিয়েছে যেন তারা তাদের সন্তানদের কোনো বিক্ষোভে অংশ নিতে না দেয়।